শুনতে কি পাও আদিবাসী মারমা বিজ্ঞানীর ডঃ-মংসানু চিৎকার?
শিক্ষা ও গবেষণায় যার এতো সফল তবুও কেন তার এতো বিষাদ ? পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিগিনালা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেও Mong Sano Marma Bathowai বিশ্বের খ্যাতনামা হাভার্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র বোস্টন শহরে একজন সফল গবেষক। সিনিয়র বিজ্ঞানী থেকে বিজ্ঞানীদের প্রিন্সিপল -Nucleotide । যার জীবনে এতোই অর্জন ও সফলতা তবুও তার মনে কেন এতো হাহাকার? এই সফল বিজ্ঞানী স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে সুখী মনে হলেও তার ভিতরটা বিষাদে ভরা। কিছের তার এতো বিষাদ?
সফলতা তার হাতের মুঠোয়। একটির পর একটি সফলতা যতোই তার জীবনে ধরনা দিচ্ছিলো ততোই তার মারমা জাতি পিছনে পরে যাচ্ছিলো। ৩৫ বছর আগে নিজ চোখে দেখেছেন মারমাদের প্রতিপত্তি। কিন্তু ৩৫ বছর পর তিনি অার অঙ্ক মিলাতে পারেন না কিভাবে সেই ঐশ্চর্য্যশালী মারমা জাতিকে দারিদ্র্য গ্রাস করলো। দিগন্তজোড়া যে মারমাদের ভূমি ছিল আজ তা অন্যের। এক সময়ে যে মারমা ছিল জমিদার আজ সে ভূমিহীন। খাগড়াছড়ির শহরের বাজার এলাকা , কোর্ট বিল্ডিং , মধুপুর, মিলনপুর , নিউজিল্যান্ড ও গোলাবাড়ি এলাকায় বর্তমান বাজার মূল্যে কয়েকশ কোটি টাকার ভূমি পানির ধরে বিক্রি করে দিলো। মারমা জাতির অসচেতনার সাক্ষী হিসেবে ইতিহাসে থেকে যাবে খাগড়াছড়ি শহরের একমাত্র মারমা গ্রাম পানখাইয়া পাড়া যা চাকমা - ত্রিপুরা- বাঙালি সবাই জানে। পান খাইতে গিয়ে মারমা জমিদার সব ভূমি লিখে দিলো পানের ব্যাপারী এক হিন্দুকে। যে জাতি প্রতিপত্তিতে সব জাতি থেকে এগিয়ে ছিল আজ সে জাতি ভূমিহীন, চেতনাহীন , শিক্ষায় পিছিয়ে ও দারিদ্র্য তাদের সাথী। সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই হাতে ধরা মদ বোতল ও তাস পাতা আজও তারা ছাড়তে পারেননি। বৃটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে চলে গেছে ৭৩ বছর অাগে। অথচ এ জাতি এখনো বোতল ও তাস পাতা ছাড়তে পারেনি।
বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা বিজ্ঞানী ডঃ মং সানু মারমার দু'চোখে ভেসে উঠে নিজ জাতির করুণ চিত্র। হাহাকার করে উঠে তার মন। কখনো নিজের অজান্তে দু'চোখ বেয়ে গড়িয়ে পরে অশ্রু। ১০ হাজার মাইল দূর থেকে প্রতিধ্বনিত হয়ে তার দু'কানে বেজে উঠে মারমা মহাজনের ইট ভাঙার শব্দ। জাতির এই দূর্দিনে অদম্য এই মেধাবী সফল মারমা বিজ্ঞানী আজ যেন কুরুক্ষেত্রর ময়দানে এক পরাজিত সৈনিক। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির চরম যুগেও তার হাহাকার ও চিৎকার পৌঁছাইনা পাহাড়ে পরে থাকা নিজ মারমা জাতির কাছে।
লিখেছেনঃ Parish chakma-
Comments
Post a Comment